Ön səhifə
   জীবন বৃত্তান্ত
   রচনাবলী
   মাসয়ালা মায়ায়েল
   বানীসমূহ
   ছেলের রচনাবলী
   পাঠাগার (ফীকাশাস্ত্র)
   ফটোগ্যলারী
   যোগাযোগ


Affiliate Websites
Affiliate Websites

   E-Mail Listing:


 

রোযার আহ্কামসমূহ

রোযা কী ?

রোযা হচ্ছে এমন যে, মানুষ আল্লাহ্ রাব্বুল আ'লামিনের নির্দেশ মান্য করার উদ্দেশ্যে ফজরের আযান থেকে মগরেবের আযান পর্যন্ত যা কিছু রোযাকে বাতিল করে তা আঞ্জাম দেয়া থেকে নিজেকে দুরে রাখবে৷

নিয়ত

মাসয়ালা-১

মানুষের আন্তরে অথবা মুখে এটা বলার কোন প্রয়োজন নেই যে আগামীকাল রোযা রাখবো৷ বরং এতটুকুই যথেষ্ট যে, আল্লাহ্ রাব্বুল আ'লামিনের নির্দেশ মান্য করার উদ্দেশ্যে ফজরের আযান থেকে মগরেব পর্যন্ত যা কিছু রোযাকে বাতিল করে তা আঞ্জাম দেয়া থেকে নিজেকে দুরে রাখবে৷ সারা দিন ধরে রোযা ছিল এটার উপর পরিপূর্ণ বিশ্বাস আনার জন্য ফজরের আযানের কিছু সময় আগে থেকে এবং মগরবের কিছু সময় পর পর্যন্ত রোযা বাতিল করে দেয় এমন কাজ করা থেকে বিরত থাকতে হবে৷

মাসয়ালা-২

ওয়াজিব রোযা, যেমন রমযান মাসের রোযার ক্ষেত্রে রাতের শুরু থেকে ফজরের আযান পর্যন্ত যে কোন সময় পরবর্তী দিনের রোযার নিয়ত করাতে কোন সমস্যা নেই৷ যদি না জানা থাকে অথবা ভুলে যেয়ে থাকে যে এটা রমযান মাস অথবা অন্য কোন ওয়াজিব রোযা, যোহ্রের আগে বুঝতে পারে এবং যে সকল কাজ করলে রোযা বাতিল হয়ে যায় তা না করে থাকে তাহলে অবশ্যই নিয়ত করতে হবে৷ আর সে ক্ষেত্রে রোযা সহীহ্ হবে৷ আর যদি এমন কাজ করে থাকে যা রোযাকে বাতিল করে দেয় অথবা যোহ্রের পরে বুঝতে পারে তবে সেক্ষেত্রে ঐ রোযা বাতিল বলে গণ্য হবে, তথাপিও অবশ্যই মগরেব পর্যন্ত এমন কোন কাজ করা যাবে না যা রোযাকে বাতিল করে দেয় এবং পরবর্তীতে ঐ রোযাকে কাযা করতে হবে৷ তবে মুসতাহাব রোযার ক্ষেত্রে রাতের শুরু থেকে পরবর্তী দিনের মগরেবের পূর্ব পর্যন্ত নিয়ত করার সময় আছে, যদি এ সময়ের মধ্যে এমন কোন কাজ না করে থাকে যা রোযাকে বাতিল করে দেয় তবে মুসতাহাব রোযার ক্ষেত্রে নিয়ত করতে পারবে এবং ঐ রোযা সহীহ্ হবে৷

মাসয়ালা-৩

যদি রমযান মাসের রোযা ব্যতীত অন্য কোন রোযা রাখতে চায় তবে অবশ্যই তা নির্দিষ্ট করতে হবে যেমনঃ নিয়ত করবে যে, কাযা রোযা অথবা মানতের রোযা রাখছি, কিন্তু রমযান মাসে প্রয়োজন নেই যে নিয়ত করবে রমযান মাসের রোযা রাখছি৷ বরং যদি না জানা থাকে অথবা ভুলে যেয়ে থাকে অথবা এই মাসে অন্য রোযার নিয়ত করে তবে তা রমযান মাসের রোযা হিসেব হবে৷

মাসয়ালা-৪

যদি জানা থাকে যে এটা রমযান মাস এবং ইচ্ছাকৃতভাবে অন্য রোযার নিয়ত করে তবে সেক্ষেত্রে ঐ রোযা না রমযানের রোযা বা না যে রোযার নিয়ত করেছিল হিসেব হবে৷

মাসয়ালা-৫

যদি রোযার নিয়ত করার পর কেউ মাতালের মত হয়ে পড়ে এবং পরে হুস আসে তবে শতর্কতামুলক ওয়াজিব হচ্ছে অবশ্যই ঐ দিন রোযা থাকতে হবে এবং ঐ রোযার কাযাও করতে হবে৷ কিন্তু যদি বেহুস হয়ে পড়ে এবং পরে হুস আসে তবে ঐ রোযা সম্পূর্ণ করবে এবং তা সহীহ্ হবে৷

মাসয়ালা-৬

যদি নিয়ত না করেই কেউ মাতালের মত হয়ে পড়ে এবং ঐ দিনের মধ্যেই হুস ফিরে আসে তবে অবশ্যই ঐ দিনের রোযা সম্পূর্ণ করতে হবে এবং পরবর্তীতে তার কাযাও করতে হবে৷ কিন্তু যদি বেহুস হয়ে পড়ে এবং ঐ দিনের মধ্যেই হুস ফিরে আসে তবে শুধুমাত্র তার কাযা করলেই যথেষ্ট হবে৷

মাসয়ালা-৭

যদি কেউ ফজরের আযানের আগে রোযার নিয়ত করে ঘুমিয়ে পড়ে এবং মগরেবের পরে জাগ্রত হয়, সেক্ষেত্রে তার ঐ রোযা সহীহ্ হবে৷

মাসয়ালা-৮

যদি কেউ প্রথম দিনের রোযার নিয়ত করে রোযা রাখে এবং পরে বুঝতে পারে যে, সেটা দ্বিতীয় অথবা তৃতীয় দিনের রোযা ছিল তবুও সেক্ষেত্রে তার রোযা সহীহ্ হবে৷

মাসয়ালা-৯

যদি কেউ না জানা থাকে অথবা ভুলে যেয়ে থাকে যে, এটা রমযান মাস এবং যোহ্রের আগে বুঝতে পারে; সেক্ষেত্রে যে সকল কাজ করলে রোযা বাতিল হয়ে যায় তা আঞ্জাম দিয়ে থাকে অথবা যোহ্রের পরে বুঝতে পারে যে, এটা রমযান মাস তবে তার রোযা বাতিল বলে গণ্য হবে৷ কিন্তু অবশ্যই রমযান মাসে মগরেব পর্যন্ত এমন কোন করবে না যা রোযাকে বাতিল করে দেয় এবং রমযান মাসের পরে তা কাযা করতে হবে৷

মাসয়ালা-১০

যদি কোন কিশোর/কিশোরী রমযান মাসে ফজরের আযানের আগে বালেগ হয় তবে অবশ্যই তাকে রোযা রাখতে হবে৷ আর যদি ফজরের আযানের পরে বালেগ হয় তবে ঐ দিনের রোযা তার উপর ওয়াজিব হবে না৷

মাসয়ালা-১১

যে ব্যক্তি মৃত্যু ব্যক্তির রোযা রাখার জন্য দায়িত্বভার গ্রহণ করে মুসতাহাব রোযা রাখে তাতে কোন সমস্যা নেই, কিন্তু যদি কারো কাযা রোযা থেকে থাকে তাহলে সে মুসতাহাব রোযা রাখতে পারবে না৷ আর যদি ভুলে যায় অথবা মুসতাহাব রোযা রেখে ফেলে সেক্ষেত্রে যোহরের আগে মনে আসলে মুসতাহাব রোযা নষ্ট হয়ে যাবে তখন সে তার নিয়তকে ওয়াজিব রোযায় পরিবর্তন করতে পারবে৷ আর যদি যোহ্রের পরে বুঝতে পারে তবে তার রোযা বাতিল বলে গণ্য হবে এবং যদি মগরেবের পরে মনে আসে তবে সেক্ষেত্রে তার রোযা সহীহ্৷

মাসয়ালা-১২

যদি রমযান মাসে যোহ্রের আগে কোন কাফির মুসলমান হয় এবং ফজরের আযানের সময় থেকে ঐ সময় পর্যন্ত যে সকল কাজ করলে রোযা বাতিল হয়ে যায় তা আঞ্জাম না দিয়ে থাকে শতর্কতামুলক ওয়াজিব হচ্ছে সে নিয়ত করে রোযা রাখবে৷ আর যদি রোযা না রাখে তবে কাযা রোযা রাখতে হবে৷

মাসয়ালা-১৩

যদি কোন অসুস্থ ব্যক্তি যোহ্রের আগে ভাল হয়ে যায় এবং ফজরের আযানের সময় থেকে ঐ সময় পর্যন্ত যে সকল কাজ করলে রোযা বাতিল হয়ে যায় তা আঞ্জাম না দিয়ে থাকে তাহলে সে যেন রোযার নিয়ত করে এবং ঐ দিন রোযা রাখে৷ আর যদি যোহ্রের পরে ভাল হয় তবে ঐ দিনের রোযা তার উপর ওয়াজিব নয়৷ পরবর্তীতে তা কাযা করলেই যথেষ্ট হবে৷

মাসয়ালা-১৪

মানুষ রমযান মাসের প্রতি রাতে পরের দিনের রোযার নিয়ত করতে পারে এবং এটা উত্তম যে, রমযান মাসের প্রথম রাতে পুরো মাসের রোযার নিয়ত করা৷ আর যা গুরুত্বপূর্ণ তা হচ্ছে প্রতি দিনের ফজরের আযানের সময় রোযার নিয়তকে স্মরণ করা৷

মাসয়ালা-১৫

যে দিনে মানুষ সন্দেহ করে যে শা'বান মাসের শেষ দিন, না কি রমযান মাসের প্রথম দিন, সে দিনে রোযা রাখা ওয়াজিব নয়৷ আর যদি সে দিন রোযা রাখতে চায় তবে রমযান মাসের রোযার নিয়ত করতে পারবে না৷ কিন্তু যদি কাযা রোযার নিয়ত করে এবং অনরূপ সে মতই আমল করে যদিও পরে বুঝা যায় যে ঐ দিন রমযান ছিল তবে তার রোযা রমযান মাসের রোযা হিসেব হবে৷

মাসয়ালা-১৬

যে দিনে মানুষ সন্দেহ করে যে শা'বান মাসের শেষ দিন, না কি রমযান মাসের প্রথম দিন, সে দিন কাযা রোযা অথবা মুসতাহাব রোযার নিয়ত করে অনুরূপ সে মতই আমল করতে হবে৷ আর যদি দিনে যে কোন সময় বুঝা যায় যে, ঐ দিন রমযান মাসের প্রথম দিন তবে অবশ্যই নিয়ত পরিবর্তন করে রমযানের নিয়ত করতে হবে যদিও তা যোহরের পরে বুঝতে পারে৷ আর যদি প্রথমেই রমযানের নিয়তে রোযা রাখে তবে তা বাতিল বলে গণ্য হবে যদিও পরে বুঝা যায় যে, ঐ দিন রমযানের প্রথম দিন৷

মাসয়ালা-১৭

যদি ওয়াজিব রোযা যেমন রমযান মাসের রোযার ক্ষেত্রে রোযার রাখার নিয়ত থেকে বের হয়েআসে তবে রোযা বাতিল হবে, কিন্তু যদি নিয়ত করে যে, এমন কাজ করবে যা রোযাকে বাতিল করে দেয় এবং ঐরূপ কাজের আঞ্জাম না দেয় তবে সেক্ষেত্রে রোযা সহীহ্ হবে৷

যে সকল জিনিষ রোযাকে বাতিল করে দেয়

যে সকল জিনিষ রোযাকে বাতিল করে দেয় তা দশ প্রকারেরঃ

১- খাদ্যদ্রব্য ভক্ষণ করা, ২- পানিয় পান করা, ৩- সহবাস করা, ৪- হস্তমৈথূন করা, ৫- আল্লাহ, নবী (সাঃ) ও নবী (সাঃ)-এর স্থলাভিষিক্তের নামে মিথ্যা বলা, ৬- খাদ্য নালীতে ধুলা-বালি পৌছানো, ৭- পানির নিচে মাথা ডুবিয়ে দেয়া, ৮- জনাবাত, ঋতুস্রাব ও সন্তান জন্মের রক্ত অবস্থায় ফজরের আযান পর্যন্ত থাকা, ৯- পয়োনালীর মাধ্যমে কোন তরল পদার্থ শরীরে প্রবেশ করানো, ১০- বমি করা৷ পরবর্তীতে এগুলোর প্রত্যেকটির আহ্কাম বর্ণনা করা হবে৷

রোযাদারের জন্য যা কিছু মাকরূহ

রোযা থাকা অবস্থায় রোযাদারের জন্য যা কিছু মাকরূহঃ

১- চোখে ঔষধ দেয়া, ২- সুরমা দেয়া যদি কি না তার গন্ধ বা স্বাদ খাদ্যনালীতে পৌছায়, ৩- রক্তদান এবং গোসল করা যার কারণে দূর্বল করে ফেলে, ৪- নাক টানা যদি জানা না থাকে যে, খাদ্যনালীতে পৌছাবে আর যদি জানা থাকে যে, খাদ্যনালীতে পৌছাবে তা যায়েয নয়, ৫- গন্ধযুক্ত লতা-পাতার গন্ধ নেয়া, ৭- মহিলাদের পানিতে বসা, ৮- সিয়াফ ব্যবহার করা, ৯- শরীরে পরে থাকা পোশাককে ভিজিয়ে রাখা, ১০- দাত তুলে ফেলা বা যে সকল কারণে গালের মধ্য থেকে রক্ত বের হয়ে আসে, ১১- ভিজা দাতন দিয়ে মেসওয়াক করা, ১২- অনিচ্ছাকৃতভাবে বীর্যস্খলন হওয়া, ১৩- নিজের স্ত্রীকে চুমু দেয়া অথবা এমন কাজ করা যা নিজের কামভাবকে বাড়িয়ে তুলে এবং যদি অত্যন্ত বিশ্বাসী থাকে যে, এ কাজের মাধ্যমে তার বীর্য বাইরে বেরিয়ে আসবে না আর যদি বিশ্বাসী না থাকে যে, বীর্য বেরিয়ে আসবে কি আসবে না সেক্ষেত্রে বীর্য বেরিয়ে আসলে তার রোযা বাতিল হয়ে যাবে৷